ছোটবেলায় কে না গল্পের বই ভালোবাসে? সেই দাদু-দিদার মুখে শোনা গল্প হোক বা বইয়ের পাতায় পড়া রাজকুমার-রাজকন্যার কাহিনি, গল্পের জাদুতে মোহিত হয়ে আমরা কখন যেন এক অন্য জগতে হারিয়ে যাই। আর যদি সেই গল্পের বইগুলো সহজে আপনার হাতের মুঠোয় চলে আসে, তাহলে কেমন হয়? হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন, আজ আমরা কথা বলব বাচ্চাদের গল্পের বই পিডিএফ নিয়ে। ভাবছেন, পিডিএফ কেন? আজকাল সবকিছুই তো হাতের মুঠোয়, তাই না? চলুন, আজ এই ডিজিটাল দুনিয়ায় কীভাবে আপনার সোনামণিদের জন্য সেরা গল্পের বইগুলো খুঁজে পাবেন, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি।
কেন বাচ্চাদের গল্পের বই পিডিএফ এত জনপ্রিয়?
ডিজিটাল যুগ আমাদের জীবনকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। স্মার্টফোন, ট্যাবলেট বা কম্পিউটার এখন আমাদের নিত্যসঙ্গী। আর এই প্রযুক্তির হাত ধরেই বই পড়ার অভ্যাসও এখন ডিজিটাল রূপ নিয়েছে। বাচ্চাদের জন্য গল্পের বই পিডিএফ ফরম্যাটে পাওয়ার বেশ কিছু দারুণ সুবিধা আছে।
১. সহজলভ্যতা ও সুবিধা
সারা বছর ধরে নতুন বইয়ের দোকানে না গিয়েও আপনার পছন্দের গল্পের বইগুলো ডাউনলোড করে নিতে পারছেন, এর চেয়ে সুবিধার আর কী হতে পারে? একটা ক্লিকেই চলে আসছে শত শত বই। ধরুন, রাতের বেলা আপনার বাচ্চা হঠাৎ একটা নতুন গল্প শুনতে চাইল, আর আপনার কাছে সেই মুহূর্তে নতুন কোনো বই নেই। কী করবেন? ইন্টারনেট থেকে ঝটপট পিডিএফ ডাউনলোড করে নিলেই তো হলো!
২. সাশ্রয়ী
কাগজের বই কিনতে গেলে একটা নির্দিষ্ট খরচ হয়। কিন্তু পিডিএফ বই অনেক সময় বিনামূল্যে পাওয়া যায়, আবার অনেক কম দামে কেনাও যায়। এতে আপনার পকেটেও চাপ কমে আর আপনার বাচ্চার জন্য গল্পের ভাণ্ডারও সমৃদ্ধ হয়।
৩. পরিবেশবান্ধব
আমরা সবাই জানি, কাগজ তৈরি হয় গাছ কেটে। যত বেশি কাগজের বই তৈরি হবে, তত বেশি গাছ কাটা পড়বে। পিডিএফ বই ব্যবহার করে আমরা পরিবেশ রক্ষায় একটু হলেও অবদান রাখতে পারি। এটা এক দারুণ ব্যাপার, তাই না?
৪. সহজে বহনযোগ্য
আপনার ফোন বা ট্যাবলেটে শত শত গল্পের বই নিয়ে আপনি যে কোনো জায়গায় যেতে পারেন। বেড়াতে যাচ্ছেন? দীর্ঘ যাত্রাপথে আপনার বাচ্চা যেন বিরক্ত না হয়, তার জন্য শত শত গল্পের বই আপনার ফোনেই প্রস্তুত। এতে লাগেজের ভারও কমে যায়।
৫. উন্নত ফিচার
পিডিএফ রিডারে জুম করার সুবিধা আছে, ফন্ট বড়-ছোট করার অপশন আছে, এমনকি অনেক সময় অডিও সহ গল্পের বইও পাওয়া যায়। এতে বাচ্চারা আরও বেশি মনোযোগ দিয়ে গল্প শুনতে বা পড়তে পারে।
কোন ধরনের গল্পের বই খুঁজছেন?
বাচ্চাদের জন্য গল্পের বইয়ের কিন্তু কোনো শেষ নেই। রূপকথা থেকে শুরু করে অ্যাডভেঞ্চার, গোয়েন্দা কাহিনি, মজার গল্প—সব ধরনের বই-ই পাওয়া যায়। আপনার বাচ্চার বয়স এবং রুচি অনুযায়ী আপনি বিভিন্ন ধরনের বই বেছে নিতে পারেন।
১. রূপকথা ও লোককথা
আমাদের দেশের ঐতিহ্যবাহী রূপকথা আর লোককথাগুলো বাচ্চাদের নৈতিক শিক্ষা দিতে দারুণ সাহায্য করে। ঠাকুরমার ঝুলি, ঈশপের গল্প, বিদেশি রূপকথা যেমন সিন্ডারেলা, রাপুনজেল—এগুলো বাচ্চাদের কল্পনাশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
২. অ্যাডভেঞ্চার ও গোয়েন্দা কাহিনি
একটু বড় বাচ্চাদের জন্য অ্যাডভেঞ্চার আর গোয়েন্দা গল্প দারুণ মজার হতে পারে। টিনটিন, ফেলুদা, প্রফেসর শঙ্কু—এগুলো তাদের কৌতূহল বাড়ায় এবং অজানা রহস্য সমাধানের প্রতি আগ্রহ তৈরি করে।
৩. শিক্ষামূলক ও বিজ্ঞানভিত্তিক গল্প
অনেক গল্পের বই আছে যা মজার ছলে বাচ্চাদের নতুন কিছু শেখায়। যেমন, পরিবেশ সম্পর্কে, বিজ্ঞান সম্পর্কে বা বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে। এগুলো তাদের জ্ঞান বৃদ্ধি করে।
৪. মজার গল্প ও ছড়া
ছোট বাচ্চাদের জন্য মজার গল্প আর ছড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে তারা হাসতে হাসতে নতুন শব্দ শেখে এবং ভাষার প্রতি আগ্রহ জন্মায়।
৫. ঐতিহাসিক ও অনুপ্রেরণামূলক গল্প
ইতিহাসের বিখ্যাত চরিত্রদের নিয়ে লেখা গল্প বা অনুপ্রেরণামূলক গল্পগুলো বাচ্চাদের মধ্যে সাহস, দেশপ্রেম এবং ভালো কাজ করার প্রেরণা যোগায়।
কোথায় পাবেন বাচ্চাদের গল্পের বই পিডিএফ?
এখন প্রশ্ন হলো, এই সব দারুণ গল্পের বই পিডিএফ ফরম্যাটে কোথায় পাবেন? বাংলাদেশে বেশ কিছু ওয়েবসাইট এবং গ্রুপ আছে যেখানে আপনি বাচ্চাদের গল্পের বইয়ের বিশাল সংগ্রহ খুঁজে পাবেন।
১. অনলাইন লাইব্রেরি ও ওয়েবসাইট
অনেক ওয়েবসাইট আছে যারা বিনামূল্যে বা অল্প মূল্যে পিডিএফ বই সরবরাহ করে। কিছু জনপ্রিয় বাংলাদেশি ওয়েবসাইট এবং আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মের নাম নিচে উল্লেখ করা হলো:
- ই-বুক বিডি (EbookBD): এখানে আপনি বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন ক্লাসিক বাচ্চাদের বই খুঁজে পাবেন।
- বাঙলা পিডিএফ (Bangla PDF): এটিও একটি জনপ্রিয় সাইট যেখানে বিভিন্ন ধরনের বাংলা বইয়ের পিডিএফ পাওয়া যায়, যার মধ্যে বাচ্চাদের গল্পের বইও থাকে।
- রকমারি (Rokomari): যদিও এটি মূলত কাগজের বই বিক্রির প্ল্যাটফর্ম, তাদের ডিজিটাল ভার্সনেও কিছু ই-বুক পাওয়া যায়।
- আর্काइভ ডট অর্গ (Archive.org): এটি একটি আন্তর্জাতিক ডিজিটাল লাইব্রেরি যেখানে অনেক পুরনো বাংলা বইয়ের স্ক্যান করা পিডিএফ পাওয়া যায়, যা বিনামূল্যে ডাউনলোড করা যায়।
- গুগল বুকস (Google Books): এখানেও কিছু বইয়ের সম্পূর্ণ পিডিএফ বা প্রিভিউ ভার্সন পাওয়া যায়।
২. ফেসবুক গ্রুপ ও কমিউনিটি
ফেসবুকে অনেক গ্রুপ আছে যেখানে বইপ্রেমীরা নিজেদের মধ্যে পিডিএফ বই শেয়ার করেন। এমন কিছু গ্রুপে জয়েন করে আপনি আপনার পছন্দের বইগুলো খুঁজে নিতে পারেন। তবে, কপিরাইট আইন মেনে চলা জরুরি।
৩. প্রকাশকদের নিজস্ব ওয়েবসাইট
অনেক প্রকাশক তাদের নতুন বা পুরনো বইয়ের পিডিএফ ভার্সন তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেন। মাঝে মাঝে বিশেষ অফারও থাকে।
৪. ডিজিটাল বুক স্টোর
আন্তর্জাতিকভাবে অ্যামাজন কিন্ডেল (Amazon Kindle), গুগল প্লে বুকস (Google Play Books) এর মতো প্ল্যাটফর্মেও বাচ্চাদের ই-বুক পাওয়া যায়। যদিও এগুলো বেশিরভাগই ইংরেজি বই, তবে কিছু বাংলা বইও সেখানে পাওয়া যেতে পারে।
পিডিএফ বই পড়ার জন্য সেরা অ্যাপ্লিকেশন
শুধুমাত্র পিডিএফ ডাউনলোড করলেই তো হবে না, সেগুলো পড়ার জন্য ভালো একটি অ্যাপও দরকার। আপনার ফোন বা ট্যাবলেটে ভালো অভিজ্ঞতা পাওয়ার জন্য কিছু সেরা পিডিএফ রিডার অ্যাপের নাম নিচে দেওয়া হলো:
অ্যাপের নাম | সুবিধা | অসুবিধা |
---|---|---|
Adobe Acrobat Reader | সব প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ, নির্ভরযোগ্য, বহু ফিচার সমৃদ্ধ, সহজ ব্যবহার। | কিছু অ্যাডভান্সড ফিচার পেইড। |
Google Play Books | গুগল ইকোসিস্টেমের সাথে দারুণভাবে ইন্টিগ্রেটেড, ক্লাউড সিঙ্ক সুবিধা। | পিডিএফ রিডিংয়ের চেয়ে ই-পাব ফরম্যাটের জন্য বেশি ভালো। |
Foxit PDF Reader | লাইটওয়েট, দ্রুত কাজ করে, অনেক ফিচার বিনামূল্যে। | ইন্টারফেস কিছুটা জটিল হতে পারে। |
WPS Office | পিডিএফ ছাড়াও ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ারপয়েন্ট ফাইল সমর্থন করে। | কিছুটা ভারী অ্যাপ, বিজ্ঞাপনের ঝামেলা থাকতে পারে। |
Moon+ Reader | কাস্টমাইজেশনের দারুণ অপশন, চোখের জন্য আরামদায়ক মোড। | ইন্টারফেস কিছুটা পুরনো লাগতে পারে। |
বাচ্চাদের জন্য পিডিএফ বই বেছে নেওয়ার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
পিডিএফ ফরম্যাটে বই পাওয়া সহজ হলেও, আপনার বাচ্চার জন্য সঠিক বইটি বেছে নেওয়া খুবই জরুরি। কিছু বিষয় মাথায় রাখা দরকার:
১. বয়স উপযোগী কন্টেন্ট
বাচ্চার বয়স অনুযায়ী গল্পের বিষয়বস্তু এবং ভাষা নির্বাচন করা উচিত। খুব ছোট বাচ্চাদের জন্য ছবির বই বা সহজ ভাষার গল্প ভালো। একটু বড়দের জন্য জটিল প্লট বা দীর্ঘ গল্প উপযুক্ত।
২. ছবির গুণগত মান
ডিজিটাল বইয়ের ক্ষেত্রে ছবির মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঝাপসা বা নিম্নমানের ছবি বাচ্চাদের মনোযোগ নষ্ট করতে পারে। উজ্জ্বল এবং আকর্ষণীয় ছবিযুক্ত বই বেছে নিন।
৩. ভাষার সহজবোধ্যতা
গল্পের ভাষা সহজ এবং সাবলীল হওয়া উচিত যাতে বাচ্চারা সহজে বুঝতে পারে। নতুন শব্দ শেখার সুযোগ থাকলেও, তা যেন গল্পের প্রবাহে বাধা না হয়।
৪. নৈতিক শিক্ষা ও মূল্যবোধ
গল্পের মাধ্যমে বাচ্চারা অনেক কিছু শেখে। এমন গল্প বেছে নিন যা তাদের মধ্যে ভালো মূল্যবোধ তৈরি করে, যেমন – সততা, সহানুভূতি, ধৈর্য, অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা ইত্যাদি।
৫. বিজ্ঞাপনমুক্ত অভিজ্ঞতা
অনেক ফ্রি পিডিএফ রিডার অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের ঝামেলা থাকে। বাচ্চাদের মনোযোগ যাতে বিঘ্নিত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। সম্ভব হলে বিজ্ঞাপনমুক্ত অ্যাপ বা প্রিমিয়াম ভার্সন ব্যবহার করুন।
ডিজিটাল বইয়ের পাশাপাশি কাগজের বইয়ের গুরুত্ব
যদিও আমরা ডিজিটাল বইয়ের সুবিধা নিয়ে কথা বললাম, কাগজের বইয়ের গুরুত্বও কিন্তু কোনো অংশে কম নয়। ডিজিটাল বই পড়ার পাশাপাশি বাচ্চাদের হাতে কাগজের বই তুলে দেওয়াও সমান জরুরি।
১. স্পর্শের অনুভূতি
কাগজের বইয়ের পাতা উল্টানোর অনুভূতি, কাগজের গন্ধ—এগুলো ডিজিটাল বইতে পাওয়া যায় না। এই স্পর্শের অনুভূতি বাচ্চাদের বইয়ের সাথে একাত্ম হতে সাহায্য করে।
২. চোখের আরাম
দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখে চাপ পড়তে পারে। কাগজের বই চোখের জন্য বেশি আরামদায়ক।
৩. মনোযোগ বৃদ্ধি
ডিজিটাল ডিভাইসে নোটিফিকেশন বা অন্য অ্যাপের কারণে মনোযোগ নষ্ট হতে পারে। কাগজের বই পড়ার সময় মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হয়।
৪. সংগ্রহ তৈরি
নিজের একটি ব্যক্তিগত বইয়ের সংগ্রহ তৈরি করা বাচ্চাদের জন্য আনন্দের। তারা তাদের পছন্দের বইগুলো সাজিয়ে রাখতে ভালোবাসে।
সুতরাং, ডিজিটাল এবং কাগজের বই—দুটোরই নিজস্ব গুরুত্ব আছে। আপনার বাচ্চার জন্য দুটোরই সংমিশ্রণ একটি দারুণ অভিজ্ঞতা তৈরি করতে পারে।
SEO অপ্টিমাইজেশন টিপস: "বাচ্চাদের গল্পের বই পিডিএফ"
আপনার লেখাটি যেন গুগল সার্চে সহজে খুঁজে পাওয়া যায়, তার জন্য কিছু SEO টিপস অনুসরণ করা জরুরি।
- প্রাথমিক কিওয়ার্ড: "বাচ্চাদের গল্পের বই পিডিএফ" এই কিওয়ার্ডটি আপনার লেখার শিরোনাম, প্রথম প্যারাগ্রাফ এবং লেখার মধ্যে কয়েকবার ব্যবহার করুন। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার করবেন না, এতে লেখাটি কৃত্রিম মনে হতে পারে।
- সহায়ক কিওয়ার্ড: "বাচ্চাদের বাংলা গল্পের বই পিডিএফ", "রূপকথার বই পিডিএফ", "ছোটদের গল্পের বই ডাউনলোড", "শিশুদের গল্পের বই ফ্রি ডাউনলোড" ইত্যাদি কিওয়ার্ডগুলো লেখার মধ্যে প্রাসঙ্গিকভাবে ব্যবহার করুন।
- শিরোনাম (H1, H2, H3): আপনার শিরোনামগুলোতে কিওয়ার্ড ব্যবহার করুন। যেমন, "কেন বাচ্চাদের গল্পের বই পিডিএফ এত জনপ্রিয়?", "কোথায় পাবেন বাচ্চাদের গল্পের বই পিডিএফ?" ইত্যাদি।
- ছবির Alt Text: যদি কোনো ছবি ব্যবহার করেন, তবে সেগুলোর Alt Text-এ কিওয়ার্ড ব্যবহার করুন।
- মেটা ডেসক্রিপশন: আপনার ব্লগ পোস্টের মেটা ডেসক্রিপশনেও কিওয়ার্ড ব্যবহার করুন, যা সার্চ রেজাল্টে দেখা যায়।
- অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক লিঙ্ক: আপনার লেখার মধ্যে প্রাসঙ্গিক অন্যান্য ব্লগ পোস্ট বা নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইটের লিঙ্ক দিন। এটি আপনার লেখার বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায়।
- পড়ার সহজবোধ্যতা: সহজ ভাষা এবং ছোট ছোট প্যারাগ্রাফ ব্যবহার করুন যাতে পাঠক সহজে লেখাটি পড়তে পারে। গুগল এখন ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাকেও গুরুত্ব দেয়।
কিছু মজার প্রশ্ন ও উত্তর
আপনার মনে হয়তো এই বিষয়ে আরও কিছু প্রশ্ন জেগেছে। চলুন, কিছু সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিই।
প্রশ্ন: বাচ্চাদের জন্য কোন বয়সে পিডিএফ বই পড়া শুরু করা উচিত?
উত্তর: সাধারণত ৩-৪ বছর বয়স থেকে বাচ্চারা ছবির বই দেখতে পছন্দ করে। এই সময় থেকেই আপনি তাদের জন্য ছবির পিডিএফ বই দেখানো শুরু করতে পারেন। তবে দীর্ঘসময় স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা থেকে বিরত রাখতে হবে। একটু বড় হলে, যখন তারা নিজে নিজে পড়তে শিখবে, তখন পিডিএফ বই তাদের জন্য আরও উপযোগী হবে।
প্রশ্ন: পিডিএফ বই কি বাচ্চাদের চোখের ক্ষতি করে?
উত্তর: হ্যাঁ, দীর্ঘক্ষণ ডিজিটাল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের ক্ষতি হতে পারে। তবে কিছু নিয়ম মেনে চললে এই ঝুঁকি কমানো যায়। যেমন:
* ৩০ মিনিটের বেশি একটানা স্ক্রিন টাইম দেবেন না।
* স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা কমিয়ে রাখুন।
* অ্যান্টি-গ্লেয়ার স্ক্রিন প্রটেক্টর ব্যবহার করতে পারেন।
* চোখের জন্য আরামদায়ক ‘ডার্ক মোড’ বা ‘রিডিং মোড’ ব্যবহার করুন।
প্রশ্ন: বিনামূল্যে পিডিএফ বই ডাউনলোড করা কি আইনসম্মত?
উত্তর: কিছু ওয়েবসাইট কপিরাইট মুক্ত বই বিনামূল্যে ডাউনলোড করার সুযোগ দেয়। তবে, কপিরাইটযুক্ত বই বিনামূল্যে ডাউনলোড করা বা শেয়ার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হতে পারে। সবসময় নির্ভরযোগ্য এবং আইনসম্মত উৎস থেকে বই ডাউনলোড করুন।
প্রশ্ন: কাগজের বইয়ের চেয়ে পিডিএফ বই কি বেশি ভালো?
উত্তর: ভালো-মন্দের ব্যাপারটা নির্ভর করে আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ এবং সুবিধার উপর। পিডিএফ বইয়ের যেমন সহজলভ্যতা, বহনযোগ্যতা এবং সাশ্রয়ের সুবিধা আছে, তেমনই কাগজের বইয়ের স্পর্শের অনুভূতি, চোখের আরাম এবং মনোযোগ ধরে রাখার সুবিধা আছে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি আপনি দুটোরই সমন্বয় করেন।
শেষ কথা
বাচ্চাদের জন্য গল্পের বই শুধু বিনোদন নয়, তাদের মানসিক বিকাশের এক দারুণ মাধ্যম। গল্পের মাধ্যমে তারা নতুন শব্দ শেখে, কল্পনাশক্তি বাড়ে, নৈতিক মূল্যবোধ তৈরি হয় এবং পৃথিবীর সম্পর্কে তাদের ধারণা স্পষ্ট হয়। ডিজিটাল যুগে বাচ্চাদের গল্পের বই পিডিএফ আমাদের কাছে এই অমূল্য সম্পদকে আরও সহজলভ্য করে তুলেছে। আপনার সোনামণিদের জন্য সেরা গল্পের বইগুলো খুঁজে বের করুন, তাদের সাথে গল্প পড়ুন এবং তাদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
আজকের এই ডিজিটাল যুগে আপনার বাচ্চার হাতে একটি গল্পের বই তুলে দেওয়া মানে তার সামনে জ্ঞানের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করা। আর সেই বইটি যদি পিডিএফ ফরম্যাটে আপনার হাতের কাছেই থাকে, তাহলে তো সোনায় সোহাগা!
Key Takeaways
- সহজলভ্যতা ও সাশ্রয়: পিডিএফ ফরম্যাটে গল্পের বই সহজে পাওয়া যায় এবং কাগজের বইয়ের চেয়ে সাশ্রয়ী।
- পরিবেশবান্ধব ও বহনযোগ্য: ডিজিটাল বই পরিবেশের জন্য ভালো এবং ফোন/ট্যাবলেটে শত শত বই নিয়ে ঘোরা যায়।
- বিভিন্ন ধরনের বই: রূপকথা, অ্যাডভেঞ্চার, শিক্ষামূলক, মজার গল্প—সব ধরনের বই পিডিএফ আকারে পাওয়া যায়।
- ডাউনলোডের উৎস: অনলাইন লাইব্রেরি, ওয়েবসাইট, ফেসবুক গ্রুপ এবং প্রকাশকদের ওয়েবসাইট থেকে পিডিএফ বই ডাউনলোড করা যায়।
- সেরা রিডার অ্যাপ: Adobe Acrobat Reader, Google Play Books, Foxit PDF Reader ইত্যাদি অ্যাপ পিডিএফ পড়ার জন্য ভালো।
- বাছাইয়ের গুরুত্ব: বাচ্চার বয়স, ছবির মান, ভাষার সহজবোধ্যতা এবং নৈতিক শিক্ষামূলক কন্টেন্ট দেখে বই বেছে নিন।
- কাগজের বইয়ের গুরুত্ব: ডিজিটাল বইয়ের পাশাপাশি কাগজের বইয়ের স্পর্শের অনুভূতি ও চোখের আরামের জন্য তার গুরুত্বও অপরিসীম।
- চোখের সুরক্ষা: দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিন ব্যবহার করলে চোখের সুরক্ষার জন্য বিরতি নেওয়া এবং সঠিক মোড ব্যবহার করা জরুরি।
আপনার মতামত আমাদের কাছে খুবই মূল্যবান। আপনার বাচ্চার পছন্দের গল্পের বই কোনটি? অথবা আপনি কি পিডিএফ বই পড়তে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন নাকি কাগজের বই? কমেন্ট করে জানান!